সুনামগঞ্জ , বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫ , ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক : ভেস্তে গেছে চার লেন প্রকল্প জামালগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন ইরা-সিআরইএ প্রকল্পের ‘অভিযোজন এক্সপো’ সম্পন্ন কাজের খোঁজে গ্রামাঞ্চলের দিনমজুররা শহরমুখী প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই শিল্পপণ্য মেলার আয়োজন! লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা তাহিরপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ র‌্যাবের অভিযানে ভারতীয় ২৭২ বোতল মদ জব্দ যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে তারা দেশের শত্রু : কয়ছর এম আহমদ প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত : কয়ছর এম আহমদ বিশ্বম্ভরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত শান্তিগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪০ দেশ যেন মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয় : তারেক রহমান সত্যশব্দের বর্ষার আয়োজন ‘বাদল গেছে টুটি’ দিরাই থানা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইউকের ফ্যামিলি গ্যাদারিং অনুষ্ঠিত জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে : কয়ছর এম আহমেদ জামালগঞ্জে উড়ালসড়ক প্রকল্প পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা তাহিরপুরে তোপের মুখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা

সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস: দালাল না ধরলে পদে পদে হয়রানি

  • আপলোড সময় : ১০-১২-২০২৪ ০৬:০০:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-১২-২০২৪ ০৬:০০:২২ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস: দালাল না ধরলে পদে পদে হয়রানি
স্টাফ রিপোর্টার :: সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে কথা হয় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দুলভারচর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী খোদেজা বেগমের সাথে। তিনি পাসপোর্ট অফিসে এসেছেন তার পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য। তিনি তার পাসপোর্টটি নবায়ন করার জন্য আবেদন করেন প্রায় এক মাস আগে। গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি এসেছেন পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে। খোদেজা বেগম জানান, পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য তিনি শহরের একটি ট্রাভেলসের মাধ্যমে এক মাস আগে আবেদন করেছিলেন। রিনিউ করার জন্য তার কাছ থেকে ট্রাভেলস টাকা নিয়েছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। ট্রাভেলসের এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে কেন আবেদন করলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ট্রাভেলসের মাধ্যমে আবেদন করেই একমাস লাগছে, যদি নিজেরা আবেদন করতাম তাহলে দেড় থেকে দুই মাসের আগে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার কথা চিন্তাই করা যেত না। ট্রাভেলসের লোকদের সাথে নাকি পাসপোর্ট অফিসের স্যারদের ভালো সম্পর্ক আছে, এজন্য তাদের মাধ্যমে নতুন কিংবা রিনিউয়ের আবেদন করলে সহজেই পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যায়। মূলত এজন্যই তারার (দালাল) মাধ্যমে সবাই পাসপোর্ট করেন। শুধু খোদেজা বেগম নয়, তার মতো ১০-১২ জনের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে। সবারই একই কথা, ট্রাভেলসের মাধ্যমে আবেদন করলে পাসপোর্ট অতিসহজেই পাওয়া যায়। অন্যথায় জমাকৃত আবেদনের কাগজপত্রের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি, ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে হয়রানি করা হয়। একটি নতুন ই-পাসপোর্ট আবেদন করার পরে পাসপোর্টটি হাতে পাওয়ার মধ্যে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল পুলিশ ভেরিফিকেশন। এই পুলিশ ভেরিফিকেশন যতটা দ্রুত সম্পন্ন হবে পাসপোর্টের অ্যাপ্রুভাল ততো দ্রুত পাওয়া যাবে এবং হাতে পাওয়া যাবে পাসপোর্টের কপি। কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশন পেতে আরও বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে জানান তারা। তবে ট্রাভেলসের মাধ্যমে আবেদন করলে পুলিশ ভেরিফিকেশনসহ কোনো কিছুতেই হয়রানির শিকার হতে হয় না। এজন্যই সবাই ট্রাভেলসের মাধ্যমে পাসপোর্ট নতুন কিংবা রিনিউ করতে ঝুঁকছেন। জানাগেছে, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরতদের হয়রানি এড়াতে ট্রাভেলস এজেন্সি ও দালালদের সহযোগিতা নিয়ে থাকেন আবেদনকারীরা। এতে সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার ও জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয় তাদের। এক্ষেত্রে একটি সুবিধা হয় আবেদনকারীদের। নানা হয়রানি থেকে মুক্তি পান তারা। সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, দৈনিক ১শ থেকে দেড়শ নতুন আবেদন হচ্ছে। প্রতিদিনই পাসপোর্ট অফিসে আবেদনপত্র জমা পড়ছে ১২০-১৫০টি। আর পাসপোর্ট ডেলিভারি হচ্ছে ১৫০-১৭০টি। চলতি বছরের ৫ আগস্টের পর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আবেদন পড়েছে আনুমানিক প্রায় ৮ হাজারের মতো। অপেক্ষমাণ রয়েছে প্রায় ১০০টির মতো। পাসপোর্ট ডেলিভারি হয়েছে ৭ হাজারেরও বেশি। অনুকূল পুলিশ প্রতিবেদন ও ডাকযোগে প্রাপ্তি সাপেক্ষে সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১৫ কার্য দিবস বা ২৫ দিন, জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৭ কর্মদিবস বা ১৫ দিন সময় লাগে। তুলন মিয়া, নুরুল ইসলাম ও হারিছ আলীসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দালালের (ট্রাভেলসের) মাধ্যমে আবেদন জমা দিলে হয়রানি ছাড়া দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়া যায়। এ জন্য দালালেরা অতিরিক্ত তিন থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে থাকে। আবার দালাল ছাড়া আবেদনকারীদের পড়তে হয় নানা ধরনের হয়রানিতে। হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে মানুষজন দালালদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাসারচর গ্রামের উদয় বানুকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে এসেছেন তার নাতি মো. ঝিনুক মিয়া। মো. ঝিনুক মিয়া জানান, তার নানী সৌদি আরবে ওমরাহ্ হজ্জ্বে যাওয়ার জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন পত্র জমা দিতে এসেছেন। তবে তারাও আবেদন করেছেন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনের একটি ট্রাভেলসের মাধ্যমে। তবে কত টাকা লেগেছে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি। তবে সরকারি ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত টাকা লেগেছে। কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া নতুন পাসপোর্ট পেতেই মূলত ট্রাভেলসের মাধ্যমে সবাই কাজটা করায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ট্রাভেলসের প্রতিনিধি জানান, ১০ বছর মেয়াদের একটি পাসপোর্টের জন্য তারা টাকা নেন ১২ হাজার টাকা। এতো টাকা কেন নেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সবকিছুইতো ভাই ম্যানেজ করে করতে হয়। সবাইকে সামান্য খরচপাতি দিতে হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশন একটা বিষয় আছে গুলো করতে খরচ হয়। এজন্যই বাড়তি টাকা নিতে হয়। সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি কিংবা আমার অফিসের কারও সাথে কোনো ট্রাভেলসের প্রতিনিধিদের যোগাযোগ নেই। আমাদের কাছে সেবা নিতে আসা সবাই সমান, আমরা সেবার মান পূর্বের চেয়ে অনেক ভালো করেছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট ডেলিভারি করতে। পাসপোর্ট অফিস কোন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয় বলেও জানান তিনি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স